Description
প্রচন্ড শীতের বিচ্ছেদী এক রাতে দরজাটা খুলে দিয়ে মুহিন তপু সাবলীল বলে উঠে—
‘কোথায় আমার লাল সুয়েটার?’
যেন প্রচন্ড বৃষ্টি নেমেছে ফুটবল মাঠে আর চোখ খুব লাল। সাঁতার জানা মাঝি তবুও ডুবে গেল পরিচিত জলে। অথচ চরে আটকে যাওয়া জলের নৌকাটি— জলের অভাবে ভাসতে পারছে না জলের বুকে। জলের কি খুব একা লাগে, তখন?
যে প্রশ্নটি মনে করতে পারছে না প্রিয়তম কেউ একজন, সে উত্তরটি হচ্ছে মুহিন তপু। কবি মুহিন তপু। কোন রাখঢাক নেই। নিশ্চিন্তে, নির্ভাবনায় কবিতায় যে এঁকে গেল কুয়াশা শীত শীত, আস্থার সাঁকো।
একটিবার সকাল দেখার আকুতি নিয়ে মরে গেল যে লোকটা তার কথা ভাবলে মনে হয় ছায়া এক ক্লান্ত দুপুর! যুবকটি শুয়ে আছে বালুচরে আর শুনছে—
‘দেখা হবে না জেনেও সে প্রত্যাশার বীজ পুঁতে গেল সারাটি জীবন।’
কী এক কান্না কান্না ব্যথার ছায়ায় জড়িয় ধরে মুহিন! যেন পথ হারানো শিশুর মত কেউ দাঁড়িয়ে আছে— অবুঝ ভীষণ!
প্রেমে মুহিন কতটা মাতাল! তা জানতে কে বা কারা যেন মহাকালের ঠিকানায় চিঠি লিখে। তখন দেখাটাকেই বারবার অদেখা মনে হয়। ঝাপসা হয়ে আসে সব। যেন দরজাটি কেউ খুলছে না। আর ঘুমের ভিতর জেগে উঠে নদী। যেন এক পা বাড়ালেই এক পা পিছিয়ে আসে স্বপ্নের গতি। ঘুম ভেঙে গেলে দৃশ্যরা সব পার হয়ে যায়। অজস্র রমণী আসছে আর যাচ্ছে। পরম মমতায়— কোথাও পিয়ানো বাজছে।
মুহিন, এ কেমন আকুতি?
কাঁপা-কাঁপা কথায় গাঢ় কণ্ঠস্বর নিয়ে মুহিন তখন আবারো বলে—
‘প্রায়ই ঘোড়াটির লাগাম ছিঁড়ে যায়। ঘুমের ভিতর ঘোড়াটি দৌড়ায়, একলা, মনে।’
যেন এক অদ্ভূত ইশারা বুদবুদ তুলে মাথার ভিতর।
‘তোমায় ভাবলে আসে, আমার টিনের চালার ঘর/ যেন দমকা হাওয়ার রাতে, কেউ নামতা গুনে আসে,/ পরিচিত পরিচিত স্বর।’
বনের পথ, জলের পথ এবং অবশেষে মনের পথ পেরিয়ে
মাতাল শীতে বুকে আগুন লুকিয়ে রাখে যে পোষাপাখি, হয়তো তাকে উদ্দেশ্য করেই মুহিন লিখেছে—
‘কল্পনা করো আমি তোমারে কল্পনা করতেছি…’
এমনই তীব্র জ্বরের মৌসুম!
মনের ভিতর ঘনবন পুষে রেখে বনের ভেতর বনমানুষ হয়ে মুহিন তপু হেঁটে চলছে মন মানুষের খোঁজে। আপনিও সঙ্গী হোন এ আনন্দযাত্রায়। ঠকবেন না— এই নিশ্চয়তা অনায়াসেই দেয়া যায় এবং দিলাম।
…
কামরুল নাজিম
কবি ও কথাসাহিত্যিক
Reviews
There are no reviews yet.